উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো কেন নিয়মিত বন্যার শিকার হয়?



উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো কেন নিয়মিত বন্যার শিকার হয়?

কুড়িগ্রামের উলিপুরের গুনাইগাছির বাসিন্দা মনোয়ার হোসেনের দুই বিঘার ধান তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনো তার বাড়িতে পানি ওঠেনি, কিন্তু বন্যার পানি ঘরের নীচে চলে এসেছে।

‘’ক্ষেতের ধানের আশা তো ছাইড়েই দিছি। আর এক ফিট পানি উঠলে ঘর ছেড়ে স্কুল ঘরে চলে যাইতে হবে। গরুগুলাকে বড় রাস্তার ওপর একজনের বাড়িতে রাইখে আইছি,’’ তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন।

ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে আসা পানির ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপদ সীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুরের কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনো সেসব এলাকায় বন্যার পানি বাড়ছে।

অন্যদিকে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে রংপুর ও লালমনিরহাটের লক্ষাধিক মানুষ। বিশেষ করে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলো 

উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সবশেষ যে অবস্থা

উত্তরাঞ্চলের এই এলাকায় প্রতিবছরেই বন্যার প্রবণতা দেয়া দেয়। তবে অনেক এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দেয়ার কারণে এখন আর আগের মতো প্রবল আকারের বন্যা দেখা যায় না।

তবে এই বছর পানির ঢলের কারণে অনেক এলাকায় তিস্তা নদীর পাশে দেয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে গেছে বলে জানা যাচ্ছে। ফলে এসব এলাকা দিয়ে বন্যার পানি ফসলি জমি এবং লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।

রাজারহাটের ঘড়িয়ালঙাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিনহাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাদের এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানি ঢুকে দুইশর বেশি ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। সেখানকার বাসিন্দারা স্থানীয় স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন।

তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় রংপুর ও লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতির আরও খানিকটা অবনতি হয়েছে।

বিশেষ করে ভারতে উত্তরাঞ্চলেও ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সেই পানি এখন নিচের দিকে নামছে। ফলে নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আশেপাশের এলাকায় বন্যা ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী দুইদিন উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কমে আসায় ওই দিকে বন্যা পরিস্থিতির আপাতত অবনতির আশঙ্কা নেই।


Previous Post Next Post